সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানের রুম থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার ভোরের দিকে শাহপরান থানার পুলিশ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক মো. জামাল উদ্দিন। এ সময় সাইফুরের রুম থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি লম্বা দা, একটি ছুরি ও দুটি জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়।
এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ধর্ষণকারীদের শনাক্ত করতে শুক্রবার রাত থেকে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। ভোর সাড়ে চারটার দিকে শাহপরান থানার একদল পুলিশ ছাত্রাবাসে অবস্থান নেয়। পরে তল্লাশি করতে গিয়ে একটি কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলেও সাইফুর অবৈধভাবে ছাত্রাবাসে অবস্থান করছিলেন। তিনি সহযোগীদের নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস, টিলাগড় ও বালুচর এলাকায় ছিনতাই, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাতে বন্ধ ছাত্রাবাসে নিয়মিত জুয়া ও মাদকের আসর বসাতেন এমন অভিযোগও রয়েছে সাইফুরের বিরুদ্ধে।
শাহপরাণ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, গণধর্ষনের ঘটনার পর রাতেই এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় সাইফুর রহমানের রুম থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও ছুরি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে আজ শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে গণধর্ষণের শিকার তরুণীর স্বামী মাইদুল ইসলাম বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলো, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর, শাহ রনি, অর্জুন, মাহফুজ, রবিউল ও তারেক।
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ধর্ষিত তরুণী তার স্বামীকে নিয়ে সিলেটের এমসি কলেজে ঘুরতে আসেন। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তরুণীর স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য এমসি কলেজের গেটের বাইরে বের হন। এসময় কয়েকজন যুবক তরুণীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চায়। এতে তরুণীর স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর শুরু করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে তরুণী ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের হোস্টেলে নিয়ে যান এবং ওই নারীকে গণধর্ষণ করে।
এসময় তাদের সাথে থাকা ৯০-টি মডেলের একটি গাড়িও ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করেছে। সর্বশেষ ওই তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে পাঠানো হয়।
পাঠকের মতামত: